ব্যাটারি সেভারঃ বর্তমান যুগে প্রায়ই লোকের হাতেই একটি করে স্মার্ট ফোন রয়েছে এবং তারা বেশির ভাগই নিজের চেয়ে তাদের স্মার্ট ফোনের খেয়াল বেশি রাখে । কারণ এটির সাথেই তো আমাদের সময় বেশি কাটে তাই না? তো যার সাথে সময় বেশি কাটে থাকে বেশিক্ষণ জাগিয়ে রাখতে হবে। হ্যাঁ আপনি ঠিক ধরছেন আমি ফোনের ব্যাটারি কথা বলছি। আমাদের হাতের অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা স্মার্ট ফোন টি দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করার জন্য আমরা অনেকেই অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করি তার মধ্যে অনেকেই ব্যাটারি সেভার ব্যবহার করি তো আজকে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে “ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কি সত্যিই কাজ করে? ব্যাটারি সেভ করার উপায়।”
Table of Contents
ব্যাটারি সেভার অ্যাপ বা ব্যাটারি সেভার কি?
যেহেতু কথা হচ্ছে ব্যাটারি সেভিং নিয়ে তো তার আগে জেনে আসা যাক ব্যাটারি সেভার কি? ব্যাটারি সেভার হচ্ছে এমন এক ধরনের অ্যাপ যা আপনাদের স্মার্টফোনের ব্যাটারি বেশিক্ষণ ব্যাকআপ দেওয়ার জন্য সাহায্য বা যাবতীয় কাজ করে। আর সত্যিই কি ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কি কাজ করে নাকি বিষয় টা পুরো মিথ্যা সেটা আলোচনা করা হবে।
ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কি সত্যিই কাজ করে ?
যখন কথা আসছে আমাদের প্রিয় স্মার্টফোন বা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ নিয়ে তখন একটু গভীর ভাবে চিন্তা করতেই হয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই মোবাইলের চার্জ টা যেন বেশিক্ষণ থাকে আর বেশিক্ষণ ব্যবহার করতে পারে তার জন্য অনেকেই ব্যাটারি সেভার অ্যাপ বা বিভিন্ন টিপস ট্রিক ফলো করে থাকে। তাদের মধ্যে থেকে বা নতুন যারা ব্যবহার করতে চাচ্ছে ব্যাটারি সেভার তাদের মনে প্রশ্ন জাগে সত্যিই কি ব্যাটার সেভার অ্যাপ গুলো কাজ করে? এটাই কি ব্যাটারি সেভ করার এক মাত্র উপায়?
তাদের সব গুলো প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল। প্লে স্টোরে Battery Saver লিখে সার্চ করলে আমরা বহুত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ পেয়ে যাবো যারা দাবি করে তার আপনার ফোনের ব্যাটারি পাওয়ার সেভ করবে। হ্যাঁ সত্যিই ব্যাটারি সেভারের অধিকাংশ অ্যাপ ই কাজ করে থাকে। আর আপনার মোবাইলের চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখার জন্য যে ব্যাটারি সেভার অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে ঠিক তা না আপনি ম্যানুয়ালি আপনার মোবাইলের চার্জিং ব্যাকআপ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারবেন। তার আগে জানা যাক ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কিভাবে কাজ করে থাকে।
ব্যাটারি সেভার অ্যাপ যেভাবে কাজ করে থাকে!
আমরা যারা ইত্যিমধ্যে আমাদের ডিভাইসে ব্যাটারি সেভার অ্যাপ ব্যবহার করেছি তারা খেয়াল করে থাকব। অ্যাপ গুলোর ব্যাটারি সেভিং মোড অন করার পর Brightness কমে যায়, Background Process সহ মিনিমাইজ করা অ্যাপ ঠিক মতো কাজ করে না। কারণ এই অ্যাপ গুলো অন করা যেগুলো অপ্রয়োজনীয় যেটি আপনি ব্যবহার করছেন না সেইসব অ্যাপ্লিকেশন গুলো রান করা অফ করে দেয় যাতে কম পাওয়ার ব্যবহৃত হয়। মূলত ব্যাটারি সেভার অ্যাপ অপ্রয়োনীয় জিনিস গুলো কে বন্ধ করে আপনি যেটি ব্যবহার করছেন সেটি তে পাওয়ার খরচ করতে জোর দেয় অন্য গুলো যেন চার্জ ব্যবহার না করে। আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো কন্ট্রোল করার মাধ্যমে ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কাজ করে।
বর্তমান সময়ে ব্যাটারি সেভার অ্যাপ এর প্রয়োজনীয়তা
দিন যত যাচ্ছে প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে আর সেই সাথে উন্নত হচ্ছে স্মার্টফোণ কোম্পানি যার ফলে এখন মোবাইলের বিল্ডইন ভাবে ব্যাটারি সেভার অপশন দিয়ে দিচ্ছে। আর বর্তমানে প্লেস্টোর ভালো ব্যাটারি সেভা অ্যাপগুলো রিমুভ করা হয়েছে কেন করা হয়েছে আমি জানি না আর এই কারণে অ্যাপ গুলোর লিংক দিচ্ছি না। তবে কিছু ব্যাটারি সেভার অ্যাপ নাম বলছি যেগুলো আপনারা গুগল থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু এই সময়ে ব্যাটারি সেভার অ্যাপগুলো না ব্যবহার করলেও চলবে । আমি নিচে কিছু ব্যাটারি সেভিং টেকনিক দিচ্ছি যেগুলো ফলো করলে চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে সক্ষম হবেন।
ব্যাটারি সেভার অ্যাপঃ DU Battery Saver, Battery Doctor, Avast Battery Saver ইত্যাদি ।
সফটওয়্যার ছাড়া ব্যাটারি সেভিং টিপস এন্ড ট্রিকস
- ব্রাইটনেসঃ আমার আমাদের স্মার্টফোন ব্যবহার করতে অনেকেই কমন ভুল করে থাকি সেটি হলো ফোনের Brightness লেভেল নিয়ে। অনেকেই আছে দিন রাত ২৪ ঘন্টা ফুল বা একই লেভেল Brightness রেখে ব্যবহার করে। কিন্তু যা করা আমাদের চোখের ও ব্যাটারির জন্য প্রযোজ্য নহে । যখন আমরা ঘরবের বাইরে থাকব তখন আমরা অবশ্যই ১০-২০% লেভেল দিয়ে ফোন চালাবে আর যদি রাতের বেলা পারলে আরো কম দিয়ে ব্যবহার করব যতটুকু পর্যন্ত আপনি সব ঠিক ঠাক বুঝতে পারেন আর কি । আর যদি ডার্ক মোড থাকে রাতের বেলা সেটি ব্যবহার করবেন।
- অ্যাপ মানেজমেন্টঃ যারা প্রয়োজন তুলনায় বেশি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ মোবাইলে ব্যবহার করে থাকেন তাদের ব্যাটারি ব্যাকআপ কম থাকা টা স্বাভাবিক। কারণ আমরা এখন যেসব অ্যাপ ব্যবহার করে থাকে তা ফোন শুধু ইন্সটল থাকলেও বা ব্যবহার না করলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু কাজ সম্পাদন করে থাকে তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনস্টল করে দিন।
- নোটিফিকেশনঃ অ্যান্ড্রয়েড ফোনের আরেকটার জ্বালার নাম হলো নোটিফিকেশন। অনেক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ আছে যেই গুলো হুদায় হুদায় ২৪ ঘন্টা নোটিফিকেশনের ঠেলা দিতেই থাকে যার জন্য পাওয়ার কনজিউম হতেই পারে তাই না? যেমন ইমূ ব্যবহারকারী যারা তারা খেয়ারল করবেন সারাক্ষণ ইমু বাজে নোটিফিকেশন দেয় “আমার সাথে প্রেম করবা, আমি প্রেম করতে চাই, হাই জানু” আর কত কি 🤣🤣 এখন বলেন ভাই এইসব আজে বাজে নোটিকেশন দরকার আছে আপনার? তাই এই রকম অ্যাপের নোটিফিকেশন অফ রাখুন তাহলে ধোঁকা ও কম খাবেন। 😁
- লাইভ ওয়ালপেপারঃ অনেকেই ফোনের আর্কষণ বৃদ্ধির জন্য ঝাঁকানাকা টাইপের লাইভ ওয়ালপেপার লাগিয়ে রাখেন যার ফলে এটাও ব্যাটারি চার্জ তারাতারি খতম হওয়ার আরেকটা কারণ বেড়ে যায়। আর আপনার ব্যাটারি ব্যাকআপ যদি বেশিই লাগে তাহলে এইগুলো এড়িয়ে চলুন। আর বড়লোক ব্যাটারি ওয়ালা হইলে যা ইচ্ছা করেন আমাদের কি? আমরা তো গরিব তাই ব্যাটারি সেভ করতেই হইব। পানতা ভাত খেলে তো আর সেফুদা ব্যাটারি চার্জ করে দিবে না।
- ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপঃ যখন আপনার ব্যাটারি ব্যাকআপ প্রয়োজন তখন আপনার আরেকটি কাজ হবে ব্যাকগ্রাউন্ডে অর্থ্যাৎ যে অ্যাপ গুলোর দরকার পড়ছে না সেই গুলো রিসেন্ট থেকে কেটে দিবেন। অনেকেই যুক্তি দেয় রিসেন্ট অ্যাপ ক্লোজ না করার জন্য কিন্তু এতো বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয় । একটি বলে রাখি যত বেশি ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপ চলবে তত বেশি লোড পড়বে ব্যাটারি চার্জে উপর তাই ব্যাকগ্রাউন্ড এমন অ্যাপ রাখবেন না যেটা ১০-২০ মিনিটের আগে লাগছে।
- ব্যাটারি চার্জঃ ব্যাটারি চার্জ ২০% এর নিচে আসলে আর ব্যবহার না করে চার্জে লাগিয়ে দিন।
- ব্যাটারি সেভার মোডঃ আপনার ফোনে যদি ব্যাটারি সেভার মোড থাকে তাহলে তো কথাই নাই অন করে দিন সব চিন্তা এখন ওর।
আশা করি এই আর্টিকেল থেকে যথেষ্ট পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন এবং জানতে পারছেন ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো এই রকম কাজ গুলো করে আপনার ফোনের চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখে। এই জিনিস গুলো ফলো করলে আপনার আর কোন ব্যাটারি সেভার অ্যাপ দরকার পড়ছেন না আপনি নিজেই ব্যাটারি সেভার।
আরো পড়ুনঃ
কম্পিউটারে স্ক্রিনশট কিভাবে নিতে হয়? স্ক্রিনশট নেওয়ার ৩টি উপায়।
আমাদের ওয়েব সাইটের আর্টিকেল আপডেট পেতে যুক্ত ফেসবুক গ্রুপ ও পেজ ।
Leave a Reply