উইন্ডোজ সেটআপঃ আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে নতুন করে উইন্ডোজ সেটআপ করার দরকার পরে। তো এই জন্য যখন আমরা উইন্ডোজ সেটআপ করতে যায় তখন অনেক গুলো ভুল করে বসি যার জন্য আমাদের অনেক কাজ বা ফাইল হারিয়ে যায়। এই জন্য আজকের এই আর্টিকেলে জানব উইন্ডোজ সেটআপ করার আগে আমাদের কোন কাজ গুলো করা উচিত।
যারা পুরাতন কম্পিউটার ব্যবহারকারী তারা অনেকেই জানে বা অনেকেই জানে উইন্ডোজ সেটআপ করার আগে কী কী পদক্ষেপ নিতে হয়। কিন্তু সমস্যা হলো নতুন ব্যবহারকারী যারা কম্পিউটার কিছু সময় হলো ব্যবহার করে বা প্রথম বার উইন্ডোজ সেটআপ যারা দিতে যাচ্ছে তাদের নিয়ে। কারণ অনেকেই ভুল করে কোন ফাইল ব্যাকআপ না নিয়ে আবার কোন সময় সব ঠিক ঠাক করার উপর সেটআপ সময় গিয়ে ভুল করে ভুল ড্রাইভ ফরম্যাট দিয়ে দেয়। এর ফলে ঐ উক্ত ড্রাইভে যেসব ছিল সব চলে যায় আর পরে হায় হায় করা লাগে। আপনাদের যেন ঐ রকম ভুল হয় না আর হায় হায় না করতে হয় তাই এই পোস্ট। নিচের দেওয়ার সকল জিনিস গুলো মাথায় রাখবেন উইন্ডোজ সেটআপ করার আগে ।
উইন্ডোজ সেটআপ করার আগে যেসব কাজ অবশ্যই করা উচিত!
১। প্রয়োজনীয় ফাইল ব্যাকআপ নেওয়াঃ যারা নতুন বা প্রথম বার কম্পিউটারে উইন্ডোজ সেটাআপ দিতে যায় তাদের সবচেয়ে বড় ভুল হলো ফাইলের ব্যাকআপ না নেওয়া। আমরা আমাদের কম্পিউটারে যেসব ফাইল ডাউনলোড করে থাকি সেই সব ফাইল গুলো সি ড্রাইভ বা যেটা আমরা System Drive/OS Drive বলে থাকি। তার মধ্যে ডাউনলোডকৃত ফাইল গুলো স্টোর হয়ে যায় কারণ এটার ডিফল্ট লোকেশন ঐটায়। নিচের স্ক্রিনশট খেয়ার করলে বুঝতে পারবেন।
এই জন্য যখন আমরা উইন্ডোজ সেটআপ দিতে যাবো তখন ই আমাদের কাজ হবে ডাউনলোড ফোল্ডারে যত কিছু যদি তা আপনার দরকার পরে তা কপি অথবা কাট করে অন্য ড্রাইভে রাখবেন।
আর হ্যাঁ শুধু যে ডাউনলোড ফোল্ডারের ফাইল গুলো উইন্ডোজ দেওয়ার সময় চলে যায় তা না ডেস্কটপে স্ক্রিনে যে ফাইল গুলো আমরা রাখি ঐ গুলো ডিলিট হয়ে যায়। অর্থ্যাৎ সি ড্রাইভে যতকিছু থাকে সব কিছুই ডিলিট হয়ে যায় এর মানে উইন্ডোজ সেটআপ করার জন্য সি ড্রাইভ টা আমাদের ফরম্যাট করতে হয় যার ফলে সব ফাইল মুছে যায় এই জন্য ব্যাকআপ নিতে বলা হয়। Desktop ,Download ,Documents ,Picture এই গুলো এর মধ্যে যা থাকে তা আমাদের জরুরি তাই এই গুলো ব্যাকআপ নিতে হয় যদি প্রয়োজন পড়ে।
এছাড়া কিছু কাজের জন্য অনেকেই সি ড্রাইভে ফোল্ডার করে বা কোথাও কোন ফাইল রাখা লাগে এটিও ব্যাকআপ নেওয়া প্রয়োজন। উদাহরণ- অনেকেই আছে Web Development এর কাজ তারা লোকাল সার্ভার Xampp ইউজ করে থাকে যেটার ডিফল্ট লোকেশন থাকে সে ড্রাইভ এখন এই অবস্থায় যদি কেউ ব্যাকআপ না নিয়ে উইন্ডোজ দেয় তাহলে তার কাজ গুলো সম্পন্ন হারাবে। তাই উইন্ডোজ সেটআপ করার আগে প্রয়োজনীয় ফাইল ব্যাকআপ নিয়ে রাখুন।
২। স্ক্রিনশট ব্যাকআপঃ আপনার যদি আমার মতো স্ক্রিনশট মারার রোগ থাকে তাহলে অবশ্যই উইন্ডোজ দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় স্ক্রিনশট গুলো কপি/কাট করে অন্য ড্রাইভে রাখেবন। আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কাজের ও অকাজের জিনিস স্ক্রিনশট দিয়ে রাখি সেইগুলো যদি দরকার পরে সরিয়ে রাখা টা উত্তম।
৩। সফটওয়্যারঃ আমাদের কম্পিউটারে আমরা বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ইন্সটল করি থাকি তা উইন্ডোজ সেটআপ করলে চলে যায়। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের ঐ সফটওয়্যার টা ইন্সটল করা আছেই কিন্তু ইন্সটল ফাইল টা কোন ভাবে ডিলিট হয়ে গেছে।তো অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যদি উইন্ডোজ সেটআপ দেওয়ার পরেই ঐ সফটওয়্যার যদি দরকার পরে তাই সেটি আছে কিনা দেখে নিবেন।
৩। অপারেটিং সিস্টেমঃ আমরা সাধারণ তো দুই ভাবে উইন্ডোজ দিয়ে থাকে সেটআপ দিয়ে থাকি CD/DVD অথবা ISO File ডাউনলোড করার পর পেন ড্রাইভ বুট করে উইন্ডোজ দিয়ে থাকি। মাঝে মধ্যে দেখা যায় CD/DVD টির ফাইল মিসটেক থাকে বা ISO এর ফাইল ডাউনলোড করার সময় কিছু ইরর এর কারণে ফুল ডাউনলোড হয় না যার ফলে সেটআপ এর সময় গিয়ে সমস্যা করে। তাই উইন্ডোজ সেটআপ করার সময় সি ড্রাইভ ফরম্যাট দেওয়া আগে দেখে নিবেন ঠিক আছে কিনা।
৪। পেনড্রাইভ বুটঃ যদি আপনি পেন ড্রাইভ থেকে উইন্ডো দিতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিক ভাবে আপনার বুট মেনু কি পার্টিশন সাপোর্ট করে সেটা জেনে সেই পার্টিশন দিয়ে বুট করতে হবে। যদি MBR আর হয় তাহলে MBR আর GPT হলে GPT দিয়ে বুট করবেন। যদিও এটি বুট করার সময় অটো সিলেক্ট হয়ে যায় কিন্তু অনেক সময় সমস্যা করে।
৫। ব্রাউজারঃ আমরা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করার জন্য বিভিন্ন জন বিভিন্ন ব্রাউজার ব্যবহার করে তার মধ্যে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহাকারী মনে হয় বেশি। তো ব্রাউজিং এর সময় আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লগিন করে থাকি,আবার অনেক প্রয়োজনীয় সাইট বুকমার্ক করা থাকে সেই গুলো ক্রোমে জিমেইল লগিন করলে ঐসব ফিরে পাওয়া যায়। কিন্তু যারা অন্য ব্রাউজার ব্যবহার করে যেমন ফায়ার ফক্স তারা বুকমার্ক Sync করার জন্য সচরাচর অ্যাকাউন্ট খুলে রাখে না তাই দেখা যায় বুক মার্ক গুলো কোন জাগয়া নোট না করে উইন্ডোজ সেটআপ করার পর হায় হায় করে।
৬। গেমিংঃ কম্পিউটারে যারা গেম খেলে নতুন যারা তারা হয়তো জানেন না উইন্ডোজ সেটআপ করলে কিন্তু আমার গেম টাও থাকবে তাই আগে যেই গেম টা শুরু করছেন সেটা শেষ করে নিয়েন। আর যদি দরকার না পরে তাহলে সমস্যা নাই। তাছাড়া অনেকেই উইন্ডোজ দেওয়ার পর মনে করে এই আমরা এই গেম এতো লেভেল পর্যন্ত খেলা ছিল এখন কি হবে? হায় হায়। অফলাইন গেমের ক্ষেত্রে এই জিনিস টা হয়।
৭। ড্রাইভার সফটওয়্যারঃ উইন্ডোজ সেটআপ দেওয়ার আগে দেখে নিবেন আপনার কম্পিউটারের সকল ড্রাইভার সফটওয়্যার গুলো ডাউনলোড করা আছে কিনা সেটআপ দেওয়ার পর যেন আবার হয়রানি না হয়।
৮। সি ড্রাইভ সনাক্ত করণঃ যারা নতুন নতুন উইন্ডোজ সেটআপ দিতে যাচ্ছে তাদের অনেকেই ভুল করে সি ড্রাইভ ফরম্যাট না করে অন্য ড্রাইভ ফরম্যাট করে ফেলে। কারণ তাদের সি ড্রাইভ কোনটা সেটি চিনতে সমস্যা হয় এই জন্য সেটআপ দেওয়ার আগে দেখে নিবেন আপনার সি ড্রাইভ কত জিবি আর কত জিবি ফাঁকা আছে এই দুটা খেয়াল রাখলে সেটআপ উইন্ডো তে সি ড্রাইভ চিহ্নিত করতে সমস্যা হবে না।
আশা করি উপরে উইন্ডোজ সেটআপ করার আগে যেসব কাজ অবশ্যই করা উচিত তা জেনে গেছেন। এই ছিল উইন্ডোজ সেটআপ দেওয়ার টিপস এন্ড ট্রিক । এই টিপস গুলো আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দিলাম যদি কোন ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে বলবেন আর অবশ্যই নিজের মতামত কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
আরো পড়ুনঃ
ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কি সত্যিই কাজ করে? ব্যাটারি সেভ করার উপায়।
কম্পিউটারে স্ক্রিনশট কিভাবে নিতে হয়? স্ক্রিনশট নেওয়ার ৩টি উপায়।
Leave a Reply